সুশৃঙ্খল ও জামা‘আতবদ্ধভাবে আল্লাহর পথে কাজ করুন! (যেলা সম্মেলন : খুলনা ২০২২)

পল্লীমঙ্গল হাইস্কুল ময়দান, খুলনা ১৯শে নভেম্বর শনিবার : অদ্য বাদ যোহর যেলা শহরের নবীনগর থানাধীন পল্লীমঙ্গল হাইস্কুল ময়দানে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ খুলনা যেলার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত যেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব উপরোক্ত আহবান জানান।

তিনি বলেন, বাতিলের বিরুদ্ধে ঈমাদারগণকে আমীরের নেতৃত্বে জামা‘আতবদ্ধভাবে সংগ্রাম করতে হবে। এর বাস্তব শিক্ষা রয়েছে সূরা ছফে। অত্র সূরায় মুসলিম উম্মাহকে কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে সারিবদ্ধভাবে সদা প্রস্ত্তত থাকতে বলা হয়েছে। আর যুদ্ধের সারির দৈনন্দিন নমুনা হ’ল ছালাতে জামা‘আতের সারি। তিনি বলেন, ঈমানকে সর্বদা তাযা রাখার জন্য মুমিনকে সর্বদা সাংগঠনিক বন্ধন ও পারস্পরিক পরিচর্যার মধ্যে থাকতে হয় এবং কাফের-মুনাফিক থেকে দূরে থাকতে হয়। ছাহাবী আব্দুল্লহ বিন সালাম (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর একদল ছাহাবী বসে আলোচনা করছিলাম, যদি আমরা জানতে পারতাম কোন আমলটি আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয়, তাহ’লে আমরা অবশ্যই সেই আমলটি করতাম। তখন আল্লাহ অত্র সূরাটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নাযিল করেন। মুজাহিদ বলেন, ঐ মজলিসে আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা উপস্থিত ছিলেন। তিনি ৪র্থ আয়াতটি শুনে বলে ওঠেন, আমি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে দৃঢ় থাকব যতক্ষণ না মৃত্যুবরণ করব। অতঃপর ৮ম হিজরীর জুমাদাল উলা মাসে খৃষ্টান রোমক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুতার যুদ্ধে অন্যতম সেনাপতি হিসাবে তিনি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়ে যান। এভাবে দেখা যায় যে, খালেছ অন্তরে আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে আল্লাহ তাকে তা দান করেন। আমীরে জামা‘আত বলেন, পৃথিবীতে একাকী কোন বিপ্লব সংঘটিত হয়নি। তাই সমাজ বিপ্লবের মাধ্যমে অহি-র বিধান প্রতিষ্ঠা করতে হ’লে সর্বদা সুশৃঙ্খল ও জামা‘আতবদ্ধভাবে আল্ল­াহর রাস্তায় জান-মাল ব্যয় করতে হবে।

উল্লেখ্য যে, খুলনা রেল স্টেশনে নেমেই যেলা সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলমকে সাথে নিয়ে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত সরাসরি সভা পান্ডেলে চলে যান। ঐ সময় সেখানে কর্মরত ‘যুবসংঘ’ ও ‘সোনামণি’র ৭১ জন তরুণ কর্মীকে দেখে আমীরে জামা‘আত অত্যন্ত খুশী হন ও তাদের জন্য দো‘আ করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি সোজা বায়তীপাড়া রোডে তাঁর শয্যাশায়ী চাচাতো বোনকে দেখতে যান। অতঃপর সেখান থেকে তিনি তাঁর ভাগিনেয়ীর বাসায় চলে যান ও সেখানে দুপুরে বিশ্রাম নেন।

বাদ আছর তিনি গোবরচাকা আহলেহাদীছ জামে মসজিদে চলে যান। অতঃপর সেখানে বিভিন্ন যেলা থেকে আগত মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থী কর্মীদের মৌখিক পরীক্ষা নেন এবং সুধীদের সাথে মত বিনিময় করেন। এখানে মসজিদের সভাপতি মাস্টার আব্দুছ ছবূর তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি কেন্দ্রের সমাজকল্যাণ সম্পাদক অসুস্থ জনাব গোলাম মুক্তাদির-এর স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন। অতঃপর বাদ এশা তিনি মঞ্চে যান ও প্রধান অতিথির ভাষণ দেন।

যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত যেলা সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসাইন, শূরা সদস্য কাযী হারূণুর রশীদ, ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম ও যেলা ‘যুবসংঘ’-এর সাবেক সভাপতি মুহাম্মাদ শো‘আয়েব প্রমুখ। জাগরণী পরিবেশন করেন ‘আল-‘আওন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেয আহমাদ আব্দুল্ল­াহ শাকির। সম্মেলনে সঞ্চালক ছিলেন মহাগনর ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ খলীলুল্ল­াহ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাতক্ষীরা যেলা ‘আন্দোলন’-এর অসুস্থ সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান তার সুস্থতার জন্য সকলের নিকট দো‘আ চান।

আল-‘আওন : সম্মেলনে ‘আল-‘আওনে’র ক্যাম্পিং অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ক্যাম্পিংয়ে মোট ৪৮ জনের ব্ল­াড গ্রুপিং ও ২৯ জন ডোনর বা রক্তদাতা সদস্য তালিকাভুক্ত হন।