ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব (৭৩) বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা ইসলামী চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ ও গবেষক। তিনি জাতীয়ভিত্তিক ধর্মীয় সংগঠন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমানে সংগঠনটির আমীর হিসাবে দায়িত্বরত আছেন। তিনি গবেষণাধর্মী মাসিক ‘আত-তাহরীক’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক। তাঁর অধীনে বেশ কয়েকটি সমাজকল্যাণমূলক সংস্থা পরিচালিত হয়। ২০১৬ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগ থেকে প্রফেসর হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন।জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি :বাংলা ১৩৫৪ সালের ২রা মাঘ মোতাবেক ১৫ই জানুয়ারী ১৯৪৮ রবিবার দিবাগত রাত ১১-টায় তিনি বর্তমান সাতক্ষীরা যেলার সদর থানাধীন বুলারাটি গ্রামের সম্ভ্রান্ত মণ্ডল বংশের মৌলভী বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। মাতা বছীরুন্নেসা ছিলেন অত্যন্ত পুণ্যবতী মহিলা এবং পিতা ‘উস্তাযুল আসাতিযাহ’ মাওলানা আহমাদ আলী (১৮৮৩-১৯৭৬) ছিলেন খ্যাতনামা আলেম, লেখক, বাগ্মী, শিক্ ...
‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ বিশুদ্ধ ইসলাম প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারাবদ্ধ একটি সংস্কারবাদী ও মধ্যপন্থী ইসলামী আন্দোলন। এ আন্দোলন সর্বস্তরের মানুষের নিকট নির্ভেজাল তাওহীদ-এর দাওয়াত পৌঁছে দিতে চায়। এ আন্দোলন যাবতীয় শিরক-বিদ‘আত ও তাক্বলীদী ফির্কাবন্দীর বেড়াজাল থেকে মুক্ত হ’য়ে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও খোলা মনে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী নিজ নিজ জীবন, পরিবার ও সমাজ গঠনে উদ্বুদ্ধ করে। এ আন্দোলন ইসলামের প্রকৃত জ্ঞান অর্জন এবং জীবনের সকল দিক ও বিভাগে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুশীলনের দায়িত্বানুভূতি সৃষ্টি করে।
ধর্ম, সমাজ ও সাহিত্য বিষয়ক এই গবেষণা পত্রিকাটি আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মুখপত্র হিসাবে ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে যাত্রা শুরু করে অদ্যবধি প্রকাশিত হয়ে চলেছে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই তিনি পত্রিকাটির সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালনরত আছেন। এর ওয়েব এড্রেস www.at-tahreek.com
আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী দেশের অনন্য বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষানগরী রাজশাহীর নওদাপাড়া আম চত্বর সংলগ্ন নিজস্ব ক্যাম্পাসে এক মনোরম পরিবেশে অত্র প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ পরিচালিত অত্র প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর ২০০৪ সালে মূল প্রতিষ্ঠানের অনতিদূরে পৃথক স্থানে এর মহিলা শাখাটি যাত্রা শুরু করে।
‘হাদীছ ফাউণ্ডেশন শিক্ষা বোর্ড’ একটি প্রাইভেট শিক্ষা বোর্ড। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বিস্তার ঘটানো এবং এর মাধ্যমে প্রকৃত ইসলামী শিক্ষায় সুশিক্ষিত দেশ ও জাতি গঠন করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৯ সালের ১০ই জানুয়ারী এর কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে বোর্ডটির অধীনে সারাদেশে শতাধিক প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে।
‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’-এর মুখপত্র ‘তাওহীদের ডাক’। তরুণদের মাঝে ইসলামের চিরন্তন ও বিশুদ্ধ আদর্শ প্রচার ও সে আদর্শের আলোকে তাদের মাধ্যমে সুস্থ সাহিত্য বিনির্মাণ এবং জাতিকে অপসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে মুক্ত রাখার লক্ষ্যে মহান লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে পত্রিকাটির অত্মপ্রকাশ ঘটে।
হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক গবেষণা ও প্রকাশনা সংস্থা। নির্ভেজাল তাওহীদ ও ছহীহ সুন্নাহ্র আলোকে সমাজকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯২ সালে সংস্থাটির পথচলা শুরু হয়। সংস্থাটির অধীনে বিশুদ্ধ রেফারেন্স সমৃদ্ধ বইপত্র ও মাসিক পত্রিকা এবং অনলাইন-অফলাইনে অডিও-ভিডিও প্রকাশ সহ নানা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
জীবনের সূচনালগ্ন থেকে তিনি সমাজসেবায় নিয়োজিত থেকেছেন। সর্বদা অসহায় ও দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। তাওহীদ ট্রাস্ট, সালাফিয়াহ ট্রাস্ট, ইসলামিক কমপ্লেক্স, পথের আলো ফাউণ্ডেশন প্রভৃতি তাঁর প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত কয়েকটি সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান।
আল-‘আওন স্বেচ্ছাসেবী নিরাপদ রক্তদান সংস্থা। মানুষকে মাদকমুক্ত, নিরাপদ ও তাযা রক্ত সরবরাহের প্রতিজ্ঞা নিয়ে সংস্থাটি ২০১৭ সাল থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এ সংস্থা যেলায় যেলায় স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের গ্রুপ নির্ণয় ও তাদেরকে তালিকাভুক্ত করার কাজটি সম্পন্ন করে। যারা বিপদগ্রস্ত মানুষের ডাকে কোনরূপ দ্বিধা না করে স্রেফ আল্লাহকে খুশী করার জন্য মানবতার সেবায় উদ্বুদ্ধ হয়ে রক্তদানের জন্য ছুটে যাবে।
ড. গালিব ধর্ম, সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি, সাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে নিয়মিত লেখালেখি করেন। তাঁর রচিত ও অনূদিত অর্ধশতাধিক। মাসিক আত-তাহরীক পত্রিকায় নিয়মিত সম্পাদকীয় লেখা ছাড়াও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রিকায় তাঁর প্রকাশিত প্রবন্ধ-নিবন্ধের সংখ্যা প্রায় ছয় শতাধিক। তার জনপ্রিয় রচনাবলীর মধ্যে ছালাতুর রাসূল (ছাঃ), সীরাতুর রাসূল (ছাঃ), নবীদের কাহিনী, মৃত্যুকে স্মরণ, দিগদর্শন, ইসলামী খেলাফত ও নেতৃত্ব নির্বাচন ও জীবন দর্শন অন্যতম।
গত ১০ই মার্চ হ’তে ২৩শে মার্চ পর্যন্ত ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত ডঃ মাওলানা মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব সউদী সরকারের রাজকীয় মেহমান হিসাবে হজ্জব্রত পালন উপলক্ষে সউদী আরব সফর করেন। সফর শেষে দেশে প্রত্যাবর্তন করলে মাসিক ‘আত-তাহরীক’-এর পক্ষ হ’তে মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। নিম্নে সাক্ষাৎকারের সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদত্ত হলঃ
বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ-এর কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সম্মেলন ২০১১ উপলক্ষ্যে প্রকাশিত স্মারকগ্রন্থ-এ যুবসংঘের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মুহতারাম আমীর প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব প্রদত্ত সাক্ষাৎকার
[গত ৫ই অক্টোবর’২২ বুধবার অনুষ্ঠিত শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকা থেকে জার্মান বেতার ‘ডয়চে ভেলে’র প্রতিনিধি সমীর কুমার দে মোবাইলে গত ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২২ শুক্রবার রাত্রি ৯.২৭ মিনিটে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর আমীর প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব-এর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। যা নিম্নে প্রদত্ত হ’ল]
[মাসিক আত-তাহরীক-এর সম্পাদক মন্ডলীর মাননীয় সভাপতি ও ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীর প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিবে’র এই স্মৃতিচারণমূলক সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন আত-তাহরীক-এর গবেষণা সহকারী নূরুল ইসলাম ও আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব]প্রশ্ন-১ : ২২তম বার্ষিকী ‘তাবলীগী ইজতেমা ২০১২’ উপলক্ষ্যে মাসিক আত-তাহরীক বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করতে যাচ্ছে। ২২ বছর চলে আসা এই তাবলীগী ইজতেমার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে কিছু জানতে চাই?
নেপালের খ্যাতনামা আহলেহাদীছ আলেম এবং জমঈয়তে আহলেহাদীছ নেপালের আমীর মাওলানা আব্দুল্লাহ মাদানী ঝান্ডানগরী গত ২২শে ডিসেম্বর ২০১৫ এবং বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় আলেম ও মাসিক মদীনা সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন খান গত ২৫শে জুন ২০১৬ মৃত্যুবরণ করেন। তাঁদের উভয়ের সাথেই মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব-এর গাঢ় দ্বীনী সম্পর্ক ছিল। তাই তাঁদের সম্পর্কে জানার জন্য মাসিক আত-তাহরীকের পক্ষ থেকে তাঁর একটি সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
১৯৯১ সালে ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ কর্তৃক আয়োজিত ‘২য় জাতীয় সম্মেলন ও তাবলীগী ইজতেমা’ সম্পর্কে প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিবে’র এই স্মৃতিচারণমূলক সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন আত-তাহরীক-এর গবেষণা সহকারী ড. নূরুল ইসলাম